BHANDARIA SIDDIQUIA KAMIL MADRASAH
SADAR,RAJBARI. EIIN : 113473
সাম্প্রতিক খবর
২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে আলিম শ্রেণিতে ভর্তি চলছে। EIIN NO: 113473, যোগাযোগ করুন। 01733291989, 01771168464, 01725727949 *** ফাজিল (স্নাতক) পাস ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষ পরীক্ষা-২০২১ পরিবর্তিত সময়সূচী ***

ভান্ডারিয়া সিদ্দিকীয়া কামিল দরাসার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

 

১. মাদরাসার নাম: ভান্ডারিয়া ছিদ্দিকীয়া কামিলমাদরাসা।

২.১. ভৌগলিক বর্ণনা: ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের খানখানাপুর হতে দুই কিঃ মিঃ উত্তরে রাজবাড়ী  সদর উপজেলার ভান্ডারিয়া গ্রামে অবস্থিত।

২.২. ভান্ডারিয়া:  মাদরাসাটি রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ভান্ডারিয়া  গ্রামে অবস্থিত। এ গ্রামের নামানুসারে ভান্ডারিয়া মাদরাসানামে সর্বাধিক পরিচিত।

২.৩. সিদ্দিকীয়া:  পাক-ভারত উপমহাদেশের ইসলামী ও আধ্যাত্মিক আন্দোলনের উজ্জল নক্ষত্র ফুরফুরার পীর  মোজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিকী আল কুরাইশী (রহ:) এর নামানুসারে ছিদ্দিকীয়া রাখা হয়।

২.৪. পূর্বনাম:  এ মাদরাসার নাম চার স্তরে পরিবর্তন করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালে নাম ছিল ভান্ডারিয়া ছিদ্দিকীয়া ইসলামিয়া মাদরাসা। ১৯৬৩ সালে এ নাম পরিবর্তন করে ভান্ডারিয়া ছিদ্দিকীয়া সিনিয়র মাদরাসা  নামকরণ করা হয় এবং ১৯৬৯ সালে এ নাম পরিার্তন করে ভান্ডারিয়া সিদ্দিকীয়া সিনিয়র (ফাজিল) মাদরাসা নামকরণ করা হয়। সর্বশেষ ১৪/১১/২০১৬ তারিখ িইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক পাঠদানের অনুমোদনের মাধ্যমে এর নামকরণ করা হয় “ভান্ডারিয়া সিদ্দিকীয়া কামিল মদারাসা”।

 ৩.   প্রতিষ্ঠাকাল: মক্তব হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৫৫ খৃষ্টাব্দ/১৩৬২ বঙ্গাব্দ/ ১৩৭৫ হিজরি। পরবর্তীতে ১৯৬১ সালে দাখিল, ১৯৬৩ সালে আলিম ও ১৯৬৯ সালে ফাজিল  এবং ২০১৬ কামিল মাদরাসায় উন্নীত করা হয়।

৪. ১. প্রতিষ্ঠাতা:  আমীরে সালেকীন, পীরে কামেল শাহ সূফী আলহাজ্জ হযরত মাওঃ মোজ্জামেল হক সাহেব, পীর সাহেব, ভান্ডারিয়া দরবার শরীফ।

 

প্রতিষ্ঠার ইতিহাস:

রাহবারে কামিল আলহাজ্জ হযরত মাওঃ মোজ্জামেল হক ভান্ডারিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯৩২ সালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার কোনাইল গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ভারতের হুগলীর ফুরফুরা মাদরাসা ও পরে বরিশাল জিলার ছারছীনা মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। শিক্ষা সমাপ্তির পর তিনি যখন এলাকায় ফিরলেন তখন ছিল ৫০ এর দশক। বৃটিশ বেনিয়াদের নির্যাতনের ষ্ট্রীম রোলার থেকে সদ্য স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা ও ধর্মীয় অবস্থা তখন অত্যন্ত নাজুক, সে মুহুর্তে পদ্মাাবিধৌত গোয়ালন্দ মহুকুমাধীন পাঁচুরিয়া ইউনিয়ন তার ব্যতিক্রম ছিলনা। এই ইউনিয়নে দুএকটি প্রাইমারী স্কুল ছাড়া অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলনা। শিক্ষার এই নাজুক অবস্থা দেখে মাওলানা মোঃ মোজ্জাম্মেল হক সাহেব শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে পৌছে দেওয়ার নিমিত্তে সর্বাত্ত্বক প্রচেষ্টায় আত্মনিয়োগ করেন। ভাল ভাল স্কুলে ভাল বেতনে ধর্মীয় শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের আহব্বান অগ্রাহ্য করে তার পীর ও মুর্শিদ হুগলির বিখ্যাত ফুরফুরা শরীফের পীর হযরত মাওঃ আবু নসর মোঃ আঃ হাই ছিদ্দিকী ফুরফুরাভী (রহঃ), ছারছিনার পীর শাহ নেছার উদ্দিন (রহঃ) ও শাহ আবু জাফর মোঃ সালেহ (রহঃ), বাগের হাটের চিতলমারী উপজেলার সিরাজ নগর শীবপুরের পীর মাওঃ মোস্তফা সিরাজুম্মুনির (রহঃ), ওস্তাদ নিয়াজ মাখদুম খোতানী (রহঃ), পিতা মুন্সি মৌলভী তাহের উদ্দিন (রহঃ) সহ অগনিত ওলি-আউলিয়া ও সুধীজনের দোয়া ও এজাজতে ১৯৫৫ খ্রীঃ পিতা প্রদত্ত জমিতে ১০হাত ী ৬হাত দুই রুম বিশিষ্ট একখানি পাঠ কাঠির ঘর নির্মান করে এক রুমে খানকা এবং অন্য রুমে মসজিদ ও মাদরাসা শুরু করেন। প্রাথমিক ভাবে তিনি নিজেই এখানে এলাকার ছেলে ও মেয়েদেরকে কোরআনুল কারিম সহ অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষাদান শুর করেন। পরবর্তীতে এটিকে ভান্ডারিয়া সিদ্দিকীয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা নামে মান উন্নয়ন  করতে থাকেন। ১৯৬১ সালে দাখিল, ১৯৬৩ সালে আলিম ও ১৯৬৯ সালে ফাজিল মাদরাসায় উন্নীত করেন। পড়া লেখার মানোন্নয়নের জন্য এলাকাবাসী, মুরিদ ও ভক্তগণের সহযোগিতায় তিনি ১৯৯৭ খ্রীঃ পর্যন্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে মাদাসাটিকে ফাযিল পর্যায়ে উন্নীত করেন এবং বোর্ডিং ও এতিমখানাসহ বেশ কয়েকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ রিয়াজুল জান্নাত কমপ্লেক্স নামে একটি কমপ্লেক্স তৈরি করেন গড়ে তোলেন।

প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যারা স্বরণীয় যারা:

মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনেকেই স্বকরণীয় ভূমিকা রেখেছেন। তন্মধ্যে অন্যতম কয়েকজনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হল।

কাইয়োমুজ্জামান আলহাজ্জ হযরত মাওলানা আবু নছর মোহাম্মাদ আবদুল হাই ছিদ্দিকী ফুরফুরাভী (রহ:):

তিনি ফুরফুরা শরীফের মোজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিকী আল কুরাইশী (রহ:) এর বড় সাহেব জাদা। তিনি উপমহাদেশের একজন মুহাককিক আলেমে দ্বীন, মুজাদ্দিদ, হক্কানী পীর, উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার। তিনি এ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহিত করেন।

পীরে কামিল মাওলানা সিরাজুম্মুনীর (রহ:):

তিনি বাগের হাট জেলার চিতলমারী উপজেলাধীন সিরাজ নগর শীবপুর  গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফুরফুরা ও ছারছীনার পীর সাহেবদ্বয়ের হাতে মুরীদ হয়ে ইলমে মারেফতের কামালিয়াত অর্জন করেন এবং খেলাফত লাভ করেন। তিনি দেশব্যাপী হেদায়েতি কার্যক্রমের পাশাপাশি একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠা করেন। ভান্ডারিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা তারই মেঝ জামাতা। পীরে কামেল মাওলানা সিরাজুম্মুনীর (রহ:): তদ্বীয় জামাতাকে এ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বিশেষ সহযোগিতা করেন।

জনাব তাহের উদ্দীন মুনসী সাহেব।

জনাব তাহের উদ্দীন মুন্সী সাহেব আনুমানিক ১৯০০ সালে বর্তমান রাজবাড়ী সদর উপজেলার কোনাইল গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন তৎকালীন সময়ের বিশিষ্ঠ ইসলামী চিন্তাবিদ। অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্জ হযরত মাওঃ মোজ্জামেল হক সাহেবের পিতা। ছেলের উৎসাহ দেখে তিনি প্রথমে ছয় শতাংশ জমি দান করেন। পরবর্তীতে আরো জমি দান করেন। তিনি নিজেও এ মাদরাসায় পাঠদান করতেন।

এছাড়াও ছারছীনা শরীফের পীর আলহাজ্ব হযরত মাও: আবু জাফর মো: ছালেহ (রহ:), ছারছীনা আলীয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল, হযরত মাও: তাজাম্মুল হোসাইন (রহ:), শায়খুল হাদীস আল্লামা নিয়াজ মাখদুম তুর্কিস্তানী (রহ:), আবদুস সাত্তার বিহারী (রহ:) ও প্রতিষ্ঠাতার সহধর্মিনী আলহাজ্জাহ মোমেনা খাতুন অত্র মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিষ্ঠাতাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেন।